এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > ‘মিষ্টি চুরির অপরাধে’ নাবালককে লোহার চেন দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটালেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা!

‘মিষ্টি চুরির অপরাধে’ নাবালককে লোহার চেন দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটালেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সামনেই কড়া নাড়ছে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের শাসক দল সহ সমস্ত দল দলের এখন শিরে সংক্রান্তি অবস্থা। এই বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী বারবার তাঁর দলের নেতা-কর্মী তথা সদস্যদের মানবিক হবার আবেদন জানিয়েছেন।

সেই সঙ্গে তিনি তাঁদের নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষের পাশে থাকতে, তার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেদের নাম থেকে অহমিকা, অহংকার ও অমানবতা সেইসঙ্গে অস্বচ্ছতার কালিমা সম্পূর্ণ রূপে মুছে ফেলতে। কিন্তু নিন্দুকেরা বলে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার সুখের অলিন্দে বিচরণ করে শাসক দলের বেশকিছু নেতাকর্মী কেমন যেন সুখের পায়রা হয়ে উঠেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর হিতোপদেশ হয়তো তাঁদের কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না।

তাই বারবার ভিন্ন চিত্র রাজ্যবাসীর চোখে পড়ছে। এমনই একটি অমানবতার, বলা যেতে পারে নিষ্ঠুরতার করুন চিত্র ভেসে এলো যেখানে, উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘির লাহুতাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দুলেপুর গ্রামের প্রাক্তন উপপ্রধান চোর অপবাদ এর নাবালকের উপর করে চলেছেন নৃশংস অত্যাচার ও নির্যাতন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে এমনই ভয়ঙ্কর নির্যাতনের ছবি উঠে। এলো যেখানে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বাঁধা রয়েছে একটি নাবালক তার সামনে লোহার চেন হাতে নিয়ে শাস্তিদাতা ভূমিকায় অবতীর্ণ স্বয়ং দুলেপুর গ্রামের প্রাক্তন উপপ্রধান ফইজুল হক। এই অঞ্চলের একজন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাও তিনি। বেধড়ক ভাবে তিনি উত্তম-মধ্যম দিচ্ছেন সেই বালকটিকে। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে সে। রক্ত গঙ্গা বইছে তার দেহে।

কিন্তু স্থানীয় মানুষেরা নির্বাক দর্শকের ভূমিকাই পালন করছেন। কেউ কেউ কোন প্রতিবাদ করছেন না। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে সমস্ত কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে সেই বালককে। এমনি অভিযোগ উঠে এলো গ্রামের প্রাক্তন উপপ্রধান ফইজুল হকের বিরুদ্ধে। যিনি নাকি চোর অপবাদ দিয়ে এই বালকটির উপর এমন অমানবিক অত্যাচার করেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, দোকান থেকে মিষ্টি চুরির মত তুচ্ছ অপরাধের কারণেই এই বালককে লোহার চেন দিয়ে বেঁধে প্রচন্ডভাবে মারধর করলেন এলাকার প্রাক্তন উপপ্রধান ফইজুল হক। দুলেপুর গ্রামে প্রাক্তন উপপ্রধানের এহেন অত্যাচারের দৃশ্য দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসী।

গ্রামবাসীদের থেকে এই অভিযোগ শোনার পর, উত্তর দিনাজপুরের বিডিওর জনৈক জনপ্রতিনিধি পুলিশ সহ সেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান। শেষপর্যন্ত পুলিশ গুরুতরভাবে আহত ও প্রায় সংজ্ঞাহীন ওই বালককে উদ্ধার করে ও তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।

উপপ্রধান ফজলুল হকের এই নৃশংস অত্যাচার গ্রামবাসীদের মধ্যে একদিকে যেমন আতঙ্কর সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে তেমনি এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামবাসী। উপপ্রধান ফজলুল হক স্বয়ং তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তাকে বলতে শোনা গেছে, ”অনেকদিন ধরেই মোবাইল ফোন-সহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করছিল। আজকে একটা দোকান থেকে মিষ্টি চুরি করে। তাই একটু শিক্ষা দিতে মেরেছি। পুলিশের হাতে তুলে দিলে ভয় কমে যেত। তাই নিজে একটু মেরেছি।”

তবে গ্রামের এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা কিন্তু আবার এবিষয়ে কিছুটা ভিন্ন মত প্রদর্শন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন যে, ওই মিষ্টি চুরির ঘটনায় ওই বালকের সঙ্গে সঙ্গে সেই উপ-প্রধানের ভাইপোর নাম জড়িয়েছিল। আর নিজের ভাইপোর নাম জড়ানোর কারণেই তাঁর সমস্ত রাগও রোষ এসে পরে ওই বালকের ওপর। আর তার প্রতিশোধ নিতেই নির্মম অত্যাচার চালান তিনি।

বালকের প্রতি এই নির্যাতন প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বিডিও বিজয় মোক্তার বলেছেন, ”আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। পুলিশকে জানানো হয়েছে।” সংবাদ সূত্রে জানা গেছে উপ-প্রধানের এই নির্মম কীর্তির ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত ইতিমধ্যেই পুলিশ শুরু করে দিয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!