এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > নদীয়ায় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রাজীবের সাংগঠনিক বৈঠক ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে জল্পনা

নদীয়ায় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রাজীবের সাংগঠনিক বৈঠক ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে জল্পনা


নদীয়া জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের রাশ যথেষ্ট হালকা হয়েছে গত লোকসভা নির্বাচনে, এই বিষয়ে কোনো পক্ষেরই কোনো সন্দেহ নেই। তার ওপরে গোদের উপর বিষফোঁড়া মুকুল রায়। একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড এবং বর্তমানে বঙ্গ বিজেপি চাণক্য। ওই জেলায় তার একটা নিজস্ব প্রভাব রয়েছে তা বলাই বাহুল্য।

তাই যেনতেন প্রকারে নদীয়া জেলা সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চায় রাজ্যের শাসক দল। দলের সাংগঠনিক হালকে ফেরাতে নদীয়া জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, আজ শুক্রবার কৃষ্ণনগর শহরে শুধু জেলা পরিষদ সদস্যদেরকে নিয়ে বৈঠক পড়তে চলেছেন নদীয়া জেলার পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের এই সভা জেলা পরিষদের সভাকক্ষে হবে বলে জানা গেছে। সভায় সাংগঠনিক ব্যাপারে বিভিন্ন উপদেশ এবং নির্দেশ দিতে পারেন রাজীববাবু।

উল্লেখ্য, এর আগে গত মাসে পুরসভার দ্বিজেন্দ্র মঞ্চে জেলা পরিষদ সদস্য থেকে শুরু করে কর্মাধ্যক্ষ, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সকলকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করা হয়েছিল। কিন্তু এই বৈঠকে অনভিপ্রেতভাবে উপস্থিত হয়নি একাধিক জেলা পরিষদের সদস্য। তাদের এই অনুপস্থিতিকে কেন্দ্র করে নদীয়া জেলা রাজনীতিতে নানান রকম জল্পনাও ছড়ায়। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাই এদিনের এই বৈঠকে সকলকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রাজীববাবু। জানা যাচ্ছে, আজকের সভায় সাংগঠনিক শক্তি পর্যালোচনায় পাশাপাশি আলোচিত হবে জেলা পরিষদের সদস্যদের কাজ সম্পর্কে। এছাড়াও এলাকার অঞ্চলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কি রকম রয়েছে, কোন কোন কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত, উন্নয়নমূলক কর্মসূচি কে কতটা সুচারুভাবে পরিচালনা করেছেন ইত্যাদি এই দিনের আলোচনা সূচির মধ্যে রয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রাজিববাবু নদীয়া জেলার পর্যবেক্ষক হওয়ার পরে এই প্রথম জেলা পরিষদে আসছেন। এই ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের সদস্যদেরকে নিয়ে বৈঠকে বসা হবে। বিভিন্ন এজেন্ডা রয়েছে। সাংগঠনিক বিষয়ে যেমন আলোচনা হবে, তেমনই জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সকলকে বৈঠকের ব্যাপারে জানানো হয়েছে।

বস্তুত, গত মাসের 8 তারিখে কৃষ্ণনগরে বৈঠক করে রাজীববাবু সেই বৈঠকের শুরুতেই খুঁজে নেন জেলা পরিষদের সদস্য ও প্রধান প্রধান কর্মাধ্যক্ষ, পৌরসভার চেয়ারম্যান কে কে উপস্থিত আছেন আর কেই-বা অনুপস্থিত! যারা অনুপস্থিত, তারা কেন আসতে পারেননি সেই ব্যাপারে যথেষ্ট খোঁজ নিয়েছেন নদীয়া জেলার পর্যবেক্ষক। দলীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ সদস্যদের অনুপস্থিতির ব্যাপারে নেতা-নেত্রীদের কাছে প্রশ্ন করেন তিনি।

মঞ্চে বসে থাকা এক নেতার কাছে জানতে চান, বৈঠকের ব্যাপারে সবাইকে জানানো হয়েছিল কিনা! তাকে এটাও বলতে শোনা যায়, মিটিং ডাকা হলে আসবে না, এটা চলতে পারে না। সবকিছুর একটা নিয়ম-কানুন আছে। আর এরপরই তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডুকে নির্দেশ দেন, যারা আসেননি কেন আসেননি, তা আমাকে জানাবেন।

ফলে আজকের বৈঠকে সকলের উপস্থিতির ব্যাপারটা জোরে সহকারে দেখা হচ্ছে। নদীয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজীববাবু আমাদের জেলার পর্যবেক্ষক। আমরাই চেয়েছিলাম উনি একবার জেলা পরিষদে আসুন। পর্যবেক্ষক হওয়ার পর তিনি প্রথম জেলা পরিষদে আসছেন। তিনি যেমন আমাদেরকে গাইড করবেন, তেমনই কোথায় কি কাজ করতে হবে, সেটাও বলবেন বলে আমরা আশাবাদী।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বর্তমানে শাসকদলের জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা 44 জন। এদের মধ্যে অনেকেই নতুন। তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রাজীববাবুর এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্ব রাখে। যদিও এদিনের এই বৈঠক নিয়ে সকলেই উৎসাহিত। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ চঞ্চল দেবনাথ বলেন, “উনি আসায় ভালোই হবে। সাংগঠনিক আলোচনা তো হবেই, পাশাপাশি সদস্যদের কিছু জানার থাকলে অথবা কাজের ব্যাপারে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা থাকলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে সরাসরি তা জেনে নিতে পারবেন। বৈঠকের ব্যাপারে সকলকে মেসেজ পাঠানো হয়েছে। আশা করি, সকলেই উপস্থিত থাকবেন। আমরা আশাবাদী, পর্যবেক্ষককে পেয়ে আমরা নতুন করে সমৃদ্ধ হব।”

কিন্তু নদীয়া জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই বিজেপির উত্থান যেভাবে শুরু হয়েছে, তা রীতিমত শাসক দলের কাছে চিন্তার। এবারের লোকসভা নির্বাচনে নদীয়া, রানাঘাট লোকসভা আসন তৃণমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আবার লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল বলছে, 17 টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র 6 টিতে এগিয়ে শাসকদল। অন্যদিকে হরিণঘাটা, কল্যাণী এই দুটি বিধানসভা বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত।

সেই দুটি আসনেও এগিয়ে পদ্মফুল শিবির। বর্তমানে ওই দুই আসনে তৃণমূলের বিধায়ক রয়েছে। তাই নদীয়া যে শাসক দলকে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে রেখেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সেই কারণেই কর্মী সম্মেলন থেকে শুরু করে বৈঠক, সবকিছুর মধ্যে দিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির পূর্ণ মাত্রায় বৃদ্ধি এখন লক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের। যে কারণে আজকের এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!