এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নন্দীগ্রামে অশান্তির ছক তৃনমূলের? বাড়াবাড়ি করলেই চরম টাইট, হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর!

নন্দীগ্রামে অশান্তির ছক তৃনমূলের? বাড়াবাড়ি করলেই চরম টাইট, হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-তৃণমূল এমন একটা ভাব দেখায় যেন রাজ্যটা তাদের জমিদারি, তারা যা খুশি তাই করতে পারে। যেখানে গণতন্ত্রকে হত্যা করা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা হামলার শিকার তৃণমূলের দ্বারা, সেখানে সেই তৃণমূল সভ্য রাজনীতি শিখবে না, এটাই স্বাভাবিক। গণতন্ত্রকে সম্মান দেওয়া তো দূরের কথা, বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের সাথে দেখা পর্যন্ত করেন না তৃণমূলের মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী। তাই এবার নন্দীগ্রামকে অশান্ত করতে আবার নতুন ছক কষতে শুরু করেছে এই রাজ্যের শাসক দল। যেহেতু নন্দীগ্রামের বিধায়ক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং এই নন্দীগ্রামে শুভেন্দুবাবু নিজের ক্যারিসমায় বিগত পঞ্চায়েতে প্রচুর সন্ত্রাস সত্ত্বেও বিজেপিকে জয় পাইয়ে দিয়েছেন, তাই তৃণমূলের এখন গা জ্বালা শুরু হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীকে জব্দ করতে না পেরে এখন বিজেপির দখলে থাকা নন্দীগ্রামের পঞ্চায়েত গুলোর সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তৃণমূল খবরের শিরোনামে আসার পরিকল্পনা করছে। এদিন সাংবাদিকরা এক তৃণমূল নেতার বক্তব্যকে হাতিয়ার করে শুভেন্দু অধিকারীকে এই প্রশ্ন করেছিলেন। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শুভেন্দুবাবু শোনালেন প্রতিরোধের কথা। শুধু তাই নয়, সেই তৃণমূল নেতাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তার যদি ক্ষমতা থাকে, তাহলে তিনি এই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দেখান বলেও হুশিয়ারি দিলেন তিনি। আর বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্যের পর তৃণমূল এমনিতেই যে দুর্নীতি করেছে, তাতে আরও কোন কোন নেতার নাম আসবে, তা নিয়ে তারা প্রচন্ড ভয়ে রয়েছে। তার মধ্যে যদি তারা এই বিক্ষোভ করতে যায়, তাহলে শুভেন্দু অধিকারী যে ট্রিটমেন্ট দেবেন, তাতে তারা আরও চাপে পড়ে যাবে। তাই তৃণমূল মুখে বললেও এসব কতটা করবে, সেটাই একটা বড় প্রশ্ন বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, এদিন নন্দীগ্রামের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূল নেতার বক্তব্য হাতিয়ার করে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “করে দেখুক না! যদি ওদের বাপের নাম ঠিক থাকে, তাহলে ওইসব করবে। শুধু পুলিশটা যেন থানায় থাকে। বাকি এই বিক্ষোভ করতে আসলে নন্দীগ্রাম বুঝে নেবে। শুধু পুলিশকে বলুন, ওরা যেন থানায় থাকে। তৃণমূল যে চুরি করেছে, তার বিরুদ্ধেই মানুষ আমাদের দিকে রায় দিয়েছে। তাই এসব বলে কোনো লাভ নেই।” অনেকে বলছেন, কারা পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার কথা বলছে? এই তৃণমূল! যে তৃণমূলের আমলে ভুরি ভুরি দুর্নীতি, যে তৃণমূলের আমলে মন্ত্রীরা, বিধায়করা জেলে যাচ্ছে, তারা নাকি বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করবে! সত্যি, শুনলেও হাসি পায়! আসলে এসব বিক্ষোভের নামে একটা নাটক মাত্র। স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দিয়েছেন নেত্রী। তাই সেই অনুযায়ী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে নন্দীগ্রামে হারার যন্ত্রণা ভুলতে না পেরে নেত্রীর চ্যালা, চামুন্ডারা অন্য পথ বেছে নিয়ে বিক্ষোভের নামে একটা অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। তবে এই অশান্তি করতে এলে ট্রিটমেন্ট যে তৈরি রেখেছেন শুভেন্দুবাবু, তা স্পষ্ট বলেই মনে করছেন একাংশ।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূলের লজ্জা বলতে কিছু নেই। নিজেদের নেত্রী হেরে যায় শুভেন্দু অধিকারীর কাছে, তারপরেও তারা বড় বড় কথা বলেন কি করে? বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একটা দুর্নীতির অভিযোগও সামনে আনতে পারবে না তৃণমূল। এসব করে নন্দীগ্রামকে খাটো করার চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসক দল। তবে গোটা রাজ্যের মানুষ নন্দীগ্রামের দেখানো পথেই হাঁটছে। তৃণমূল বিক্ষোভ করতে আসলে করতেই পারে। কিন্তু তারা যে দুর্নীতি করেছে, তার হিসাব আগে রাজ্যের মানুষকে দিতে হবে। গোটা রাজ্যের মানুষ এই তৃণমূলকে বিদায় জানানোর জন্য তৈরি হয়ে রয়েছে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারীকে কব্জা করার জন্য কম চেষ্টা করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ দিয়ে, প্রশাসন দিয়ে, আদালত দিয়ে সব ভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে নিজের হাতে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা চোখে চোখ রেখে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। তাই এক্ষেত্রে তাকে অন্য দিক দিয়ে বিরক্ত করতে নিজের অনুগামীদের দিয়ে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতে নন্দীগ্রামে একটা অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছেন শাসকদলের নেতারা। কিন্তু এসবে যে শুভেন্দু অধিকারী দমবেন না, তিনি যে এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন, সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বরঞ্চ এদিন তৃণমূলের বিক্ষোভের কথা শুনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা যে কথা বললেন, তারপর সেই তৃণমূলকেই ভাবতে হবে যে, তারা এই বিক্ষোভ নন্দীগ্রামে করবে কিনা! তারা যদি বিক্ষোভ করতে আসে, তাহলে তাদের দেখে নেওয়ার মত ক্ষমতা যে নন্দীগ্রামের মানুষ এবং বিজেপি কর্মীদের রয়েছে, তার আগাম ইঙ্গিত দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কিন্তু মোক্ষম জায়গায় আঘাতটা দিয়ে দিয়েছেন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!