এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > নো সেটিং, মমতাকে পাত্তাই দিলেন না অমিত শাহ ! দিল্লির নৈশভোজে দারুন খেলা !

নো সেটিং, মমতাকে পাত্তাই দিলেন না অমিত শাহ ! দিল্লির নৈশভোজে দারুন খেলা !


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সাম্প্রতিক কালে বাংলায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে একটাই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে যে, বাংলায় তারা লড়াই করবে, আর দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেটিং করবে না তো! আর এই প্রশ্ন ওঠার পেছনে যথেষ্ট কারণও ছিল। কেননা জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির ডাকা নৈশভোজে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাশের চেয়ারে বসে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ছবি নিয়ে চর্চা শুরু হতেই রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় বঙ্গ রাজনীতিতে। বাম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে সেটিংয়ের অভিযোগ তোলা হয়। তবে সেই সব অভিযোগকে নশ্যাৎ করে দিয়ে আসল তথ্য সামনে নিয়ে আসলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দাবি করলেন, অমিত শাহের পাশে একটি চেয়ার খালি দেখে সেখানে বসতে ছুটে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি কথাও বলেননি। অর্থাৎ এক কথায় বিজেপি নেতৃত্বের কাছ থেকে কোনোরকম পাত্তা পাননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে অমিত শাহের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসে থাকা নিয়ে নানা চর্চা হয়েছে। আর সেই ব্যাপারে এদিন শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। যেভাবে অধীর চৌধুরী, মহম্মদ সেলিমরা বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে সেটিং রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন, তা কি সত্যি! আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী আসল খবরটি ফাঁস করে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে সেই চেয়ারে বসায়নি। বরঞ্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই একটি চেয়ার খালি দেখে সেখানে বসার জন্য ছুটে গিয়েছেন। তবে বিজেপির কেউ তার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। অর্থাৎ সেটিংয়ের যে অভিযোগ এক পক্ষ করছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। বাংলায় বিজেপি কর্মীরা, যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাদের পাশে যে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব সব সময় রয়েছে, এবং তৃণমূলের সঙ্গে যে বিজেপির এক চুল আপোসের লড়াই হবে না, তাও স্পষ্ট করলেন বিরোধী দলনেতা। শুধু তাই নয়, বিজেপি কর্মীদের উৎসাহ দিয়ে তিনি এটাও বুঝিয়ে দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বিজেপির ছাতার তলায় আসতেও চায়, তাহলেও তাকে গ্রহণ করবে না বিজেপি।

একাংশ বলছেন, সত্যিই দিল্লির নৈশভোজের ছবি বিজেপির কর্মীদের মনে ব্যাথা দিতে শুরু করেছিল। সকলের মনে একটাই প্রশ্ন ছিল, তারা লড়াই করবেন, তাদের কর্মীরা মার খাবেন, তাদের ঘর জ্বলবে, আর দিল্লিতে গিয়ে নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেটিং করে নেবেন! এটা কি ধরনের রাজনীতি! তাহলে বাংলায় তাদের লড়াই করে কি লাভ? এ লড়াই এর শেষ তো জীবনে হবে না! কিন্তু যে ছবি নিয়ে এত প্রচার চলছে, সেই ছবি কিন্তু শেষ কথা বলল না। আসল খবর এটাই যে, সেই নৈশভোজে যে চেয়ারগুলো ছিল, সেখানে কারওর নাম লেখা ছিল না। তাই একটি চেয়ার খালি পেয়ে সেখানে বসার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনেকে এখন বলতেই পারেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর এই কথা কি করে বিশ্বাসযোগ্য! গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠমহল আবার পাল্টা তাদের প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর কথা যদি বিশ্বাসযোগ্য না হয়, তাহলে এই কথা কি করে বিশ্বাসযোগ্য হবে যে, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সেটিং রয়েছে! নৈশভোজের টেবিলে কি হয়েছে, তার কোনো ভিডিও নেই। কোনো তথ্য নেই। বরঞ্চ যারা তৃণমূল এবং বিজেপির সেটিং রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন, তারাই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে তৃণমূলের সঙ্গে সর্বভারতীয় স্তরে গাটছড়া বেঁধে রয়েছেন। আর রাজ্যের বুকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব সময় লড়াইটা দিয়ে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই তার কথার মধ্যে যথেষ্ট সত্যতা রয়েছে, এটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন বিজেপি কর্মীরা। হ্যাঁ, এতদিন তারা দিল্লির এই নৈশভোজের চিত্র নিয়ে চিন্তিত ছিলেন, চর্চা চলছিল তাদের মধ্যে। তবে যে শুভেন্দু অধিকারী তাদের দুঃসময়ের সঙ্গী, সব সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেন, তিনি যখন বুঝিয়ে দিলেন যে, না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অমিত শাহ দিল্লির সেই নৈশভোজে কোনো কথা বলেননি, তখন একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গেল যে, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে কোনো সেটিং নেই। কোনোমতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেনে নেবেন না কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা। অন্তত তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!