পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণ বদলাতে গিয়ে এবার নতুন সমস্যায় তৃণমূল? বিধানসভার আগে চড়ছে পারদ উত্তরবঙ্গ তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য October 22, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বেশ কয়েক বছর হয়ে গিয়েছিল, তিনি পর্দার আড়ালে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই বিমল গুরুং প্রকাশ্যে চলে এলেন। যা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত। তবে আরও বেশি অপ্রত্যাশিত বিষয় হয়ে দাঁড়ালো, যখন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ানোর কথা বললেন। স্বাভাবিকভাবেই বিমল গুরুংয়ের এহেন প্রত্যাবর্তন এখন বাংলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক জল্পনার সৃষ্টি করেছে। একসময় এই বিমল গুরুং তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ থাকলেও, তার পরবর্তী সময়ে তিনি বিজেপির দিকে যেতে শুরু করেন। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলে তৃণমূল সরকারের ঘুম উড়িয়ে দেন তিনি। কিন্তু এবার দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে থাকা সেই বিমল গুরুং সক্রিয় ভূমিকায় চলে আসায় তৃনমূলের সাথে হাত মেলানোর কথা শোনা গেল তার গলায়। স্বাভাবিকভাবেই বিমল গুরুংয়ের তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে থাকা এবং এনডিএ ত্যাগ করা আগামী দিনে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণকে অনেকটাই পরিবর্তন করে দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এভাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিমল গুরুংয়ের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে চলে যাওয়া এবং বিজেপি ত্যাগ করা কি ভারতীয় জনতা পার্টিকে অনেকটাই অস্বস্তিতে ফেলে দিল না? এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা কখনও গোর্খাল্যান্ড করে দেব বলিনি. গোর্খাল্যান্ড ওদের ইস্যু। আমরা পাহাড়ের স্থায়ী সমস্যার সমাধান চেয়েছিলাম। তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বারবার চেষ্টা করেছে। রাজ্যকে বলেছে। রাজ্যের অসহযোগিতার জন্য সফলতা আসেনি। একসময় তো তৃণমূলের সঙ্গে ছিলেন। কেন ছেড়ে বিজেপির দিকে এসেছিলেন! তিন বছর ধরে ওকে এবং কয়েকজন যুবককে পাহাড়ের বাইরে থাকতে হচ্ছে। তার জন্য বিজেপি তো দায়ী নয়। তৃণমূলের রাজনৈতিক অত্যাচার ও পুলিশের অত্যাচারে বহু মানুষকে পাহাড় ছাড়া হতে হয়েছে। ওদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী আইন তো মুখ্যমন্ত্রী লাগিয়েছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে। ক্ষমতার জন্য পাহাড়ে ফিরতে হবে, বাধ্যবাধকতা আছে। তাই তৃণমূলের হাত ধরতে ফিরতে চাইছেন গুরুংরা। রাজনৈতিক পরিবর্তন তো হতেই থাকে, আরও হবে। আমরা চাইব, পাহাড়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অর্থাৎ বিমল গুরুং বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানোর কথা বললেও, তাকে খুব একটা গুরুত্ব না দিয়ে পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেল বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। একাংশ বলছেন, দিলীপবাবু এই কথা বলে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করলেন। তবে এই ঘটনায় পাহাড়ের রাজনীতিতে যে যথেষ্ট প্রভাব পড়বে, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। এদিকে বিমল গুরুংয়ের এহেন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেছে বাম এবং কংগ্রেসকে। এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভার কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “পাহাড় যে হাসছে না, তা আরও একবার স্পষ্ট হল। এই বিমল গুরুং একটা সময় মুখ্যমন্ত্রীকে “মা” বলেছিলেন। অথচ বনিবনা না হওয়ায় তিনি বিজেপিতে চলে যান। তখন তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারপরেই ফেরার হয়ে যান গুরুং এবং তার সঙ্গীরা। এতদিন রাজ্য পুলিশ তাদের খুঁজে পায়নি। এসব নাটক। তবে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বিমল গুরুংয়ের অবস্থানকে তৃণমূল সমর্থন করে কিনা, তা স্পষ্ট করা উচিত।” একইভাবে এই ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেছে শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্যকে। তিনি বলেন, “এটাই ভবিতব্য ছিল। 2011 সালে পাহাড়ে জেতার জন্য গুরুং বাহিনীকে ব্যবহার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব রকম কাজে সমর্থন ও মদত দেন। পরে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল বাদলে গাঁটছড়া ভেঙে যায়। কিন্তু তিন বছর ধরে খুঁজে না পাওয়ার পেছনে দু’পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া আজ স্পষ্ট হল।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে বাম এবং কংগ্রেস দুই দলই তৃণমূলের সঙ্গে বিমল গুরুংয়ের সমঝোতা রয়েছে বলে এখন দাবি করতে শুরু করেছে। তবে যে যাই বলুন না কেন, বিমল গুরুংয়ের এইভাবে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া এবং বিজেপি ত্যাগকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের রাজনীতিতে এবার ব্যাপক বদল আসতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -