এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > পিসি-ভাইপোর খেলা শেষ? কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বড় বার্তা হেভিওয়েটের! সোচ্চার বিরোধীরা!

পিসি-ভাইপোর খেলা শেষ? কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বড় বার্তা হেভিওয়েটের! সোচ্চার বিরোধীরা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মাঝে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে অনেকেই সোচ্চার হয়েছিলেন। অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, কাজের কাজ এই এজেন্সির কর্তারা কিছুই করছে না। তারা কাউকে গ্রেফতার করছে না, শুধু তল্লাশির মধ্যেই আটকে রেখেছে। কিন্তু সম্প্রতি রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আবার গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে সেই জ্যোতিপ্রিয়বাবু দাবি করেছেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে এবং সবটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন। আর এরপর থেকেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে যে, আসল মাথা যখন সব বিষয়ে জানেন, যখন এটা বলেই দিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু, তাহলে তাদের কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না? তাদের কাছ থেকে কেন তথ্য নেওয়া হবে না! তাহলে তো তদন্ত আরও দ্রুত শেষ হবে।

তাই এবার সেই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে বড় বার্তা দিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তার মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে একটা জিনিস স্পষ্ট হচ্ছে যে, আগামী দিন কি তাহলে পিসি ভাইপোর শেষের শুরু হতে চলেছে? এবার কি সেই চরম সময় চলে এসেছে! যার জন্য গোটা রাজ্যবাসী অপেক্ষা করছেন! যার জন্য অপেক্ষা করছে, বিরোধী থেকে শুরু করে যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, সকলেই। সেই দিন কি এবার দেখতে পাবেন বাংলার মানুষ! কিন্তু কি বলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়? যা নিয়ে এত শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে!

প্রসঙ্গত, এদিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “উনি তো বলেই দিয়েছেন, পিসি ভাইপো সব জানে। তাহলে তো এই পিসি ভাইপোকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত।” অনেকে বলছেন, হাততালি কুড়োনোর মত এবং সাবাসি দেওয়ার মতোই কথা বলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। এটা তো দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে, তৃণমূলে পিসি, ভাইপোর সিদ্ধান্ত ছাড়া কেউ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাই এত বড় দুর্নীতি হয়ে গেল, অথচ তারা কিছু টের পেলেন না, এটা কোনোমতেই সম্ভব নয়। আর মন্ত্রীসভা ঠিক করেন যিনি, তাকে তো অবিলম্বে জেরা করা উচিত।

তাহলেই তো তদন্ত প্রক্রিয়া আরও দ্রুত শেষ হতে পারে। তাহলে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যাদের কথা বলছেন, তাদেরকে ডেকে কেন জেরা করছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? কেন তারা এখনও পর্যন্ত অপেক্ষা করছে, এই প্রশ্ন রাজ্যবাসীরও। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারি যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেন, তাদের কাছে অত্যন্ত খুশির খবর। কিন্তু মানুষ তো অপেক্ষা করছে, আসল মাথাকে কবে ধরা হবে? তাই লকেট চট্টোপাধ্যায় যে প্রশ্ন তুলেছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে সেই পথেই হাঁটা উচিত কেন্দ্রীয় সংস্থার বলেই দাবি একাংশের।

বিরোধীদের দাবি, পিসি, ভাইপোর খেলা এবার শেষ হয়ে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভালো করে জানেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মুখবোঝা লোক নন। তিনি কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেক গোপন তথ্য ফাঁস করে দেবেন। তাই এখনও পর্যন্ত তার পাশে থাকার কথা বলে একটা নাটক চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু যে মন্ত্রীসভা তিনি ঠিক করেন, যে মন্ত্রীরা তার এত ঘনিষ্ঠ, তারা গ্রেফতার হচ্ছেন অথচ তাদের দুর্নীতি নিয়ে কিছুই জানতেন না রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান! এটা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য? পিসি, ভাইপো মিলে এখন যতই সততার পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করুন, তাদের বুজরুকি রাজ্যের মানুষ ধরে ফেলেছে। দেশের আইন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাদের কোনোমতেই ছাড় দেবে না। তাই চুনোপুটিদের ধরা শেষ করে এবার হাওয়াই চটিকে জেরা করে মূল পর্বে পৌঁছানো হোক বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, পিসি, ভাইপো ভেবে নিয়েছেন, দুর্নীতি করতে করতে তারা এভাবেই রাজ্যের সর্বনাশ করে বিদায় নেবেন, তাদের কিছু হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকার কাউকে ছাড় দেবে না। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দুর্নীতির অর্থে খাবেন না এবং কাউকে খেতেও দেবেন না। তবে এতসবের পরেও অনেকে বলেছিলেন যে, সেটিং রয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে। তাই ওপরতলার মাথাদের কিছুই হবে না। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারি সেই সব বক্তব্যকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।

আর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও গোপন কথা ফাঁস করে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবটাই জানেন। ফলে যারা জানে, তাদের এবার জেরা করার পালা শুরু করা উচিত কেন্দ্রীয় সংস্থার। লকেট চট্টোপাধ্যায়ও তাই যুক্তিসঙ্গত দাবি করে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বার্তা দিয়েছেন। ফলে সাংসদের এই বক্তব্য অনুযায়ী যদি পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা, তাহলে পিসি-ভাইপোর খেলা খতম হতে চলেছে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!