এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনা, দ্বিধা-বিভক্ত তৃণমূল শিবির!

রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনা, দ্বিধা-বিভক্ত তৃণমূল শিবির!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে হিংসার ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যার জেরে রাজ্যপালের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের আগেই রাজ্যে পা রাখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি প্রতিনিধিদল‌। যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায় রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকি নির্বাচনে পরাজয় হয়ে গিয়েছে।

তাই বিজেপি এখন যেনতেন প্রকারেণ রাজ্যপালকে হাতিয়ার করে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে বলে আশঙ্কা করে তৃণমূলের একাংশ। এমনকি এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে বিজেপির মুখপাত্র বলেও আক্রমণ করা হয়। তবে সম্প্রতি নারদা কান্ডে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী, বিধায়ক এবং এঅ প্রাক্তন মন্ত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পরই গোটা ঘটনাকে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ বলে দাবি করতে শুরু করে তৃনমূল কংগ্রেস। পরবর্তীতে সেই নেতা এবং মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তৃণমূলের রাস্তায় নেমে পড়া বিক্ষোভ নানা প্রশ্ন তুলে দেয়।

রাজ্যপালের দপ্তর রাজভবনের সামনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জমায়েত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। আর এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রাজ্যপাল গোটা ঘটনার রিপোর্ট দিতে উদ্যত হয়েছেন বলে খবর। যার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের একাংশ আবার আশঙ্কা করছেন রাজ্য ধীরে ধীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেছে। এদিকে রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনা তৈরি হতেই একসময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে যারা প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি এবং সিবিআই বলে আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন, তাদের অনেকেরই এখন মুখ বন্ধ‌।

ইতিমধ্যেই দলের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতদিন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বিজেপি, রাজ্যপাল এবং সিবিআইকে একযোগে আক্রমণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতেন। কিন্তু এখন কার্যত সেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিধাবিভক্ত হতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।

একটা অংশ এখনও পর্যন্ত বিজেপি সিবিআই ও রাজ্যপালকে আক্রমণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেও, আর একটা অংশ সকলকে সংযত থাকার আবেদন জানাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের অন্দরমহলের এই দ্বিধাবিভক্ত ভাব নিয়ে এখন কার্যত জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বলা বাহুল্য, রাজ্যে তৃতীয়বার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাদের অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে। নারদা কাণ্ডে একাধিক মন্ত্রী এবং বিধায়কের গ্রেফতার কার্যত বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে ঘাসফুল শিবিরের।

আর এই পরিস্থিতিতে একের পর এক বিক্ষোভ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে সরব হতে শুরু করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল যদি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাস্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট করে, তাহলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়। তবে বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরেও যদি সেই দিকে এগিয়ে যায় রাজ্য, তাহলে তা তৃণমূলের পক্ষে খুব একটা ভালো হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

তাই এখন কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে দেখা যাচ্ছে ঘাসফুল শিবিরকে। ইতিমধ্যেই যারা সিবিআই, রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের নেতাকর্মীদের মন্তব্য করা থেকে বেশি সচেতন করার দিকে নজর দিচ্ছেন। দলের পক্ষ থেকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখতে শুরু করেছেন, “সকলে সচেতন থাকুন। বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। ওরা অশান্তি তৈরি করে বাংলার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।”

অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস এখন বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা যদি তাদের বিক্ষোভের জেরে ভেঙে পড়ে, তাহলে রাজ্যপাল নিজের কর্তব্য অনুযায়ী রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট দেবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাষ্ট্রপতি বড় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে। তাই বড় পদক্ষেপ নেওয়ার আগে দলের নেতা-কর্মীদের সংযত করা এখন সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের কাছে।

আর সেই কারণে তৃণমূলের একাংশ না বুঝে বিজেপি, কেন্দ্রীয় সরকার, সিবিআই এবং রাজ্যপালকে লাগাতারভাবে কটাক্ষ করে গেলেও, যাতে কেউ বেফসকা কোনো মন্তব্য এবং আচরণ না করেন, তার জন্য তৃণমূলের একটা অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করছেন। যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করা এবং প্রতিবাদ করার দিক থেকে তৃণমূল কার্যত দ্বিধা-বিভক্ত বলেই দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অনেকে আবার বলছেন, এর পেছনে আরও একটি অন্যতম কারণ রয়েছে। লাগাতার বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদের ফলে রাজ্যে নারদা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, অন্য রাজ্যে এই মামলা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সিবিআই। আর তা যদি হয়, তাহলে দ্রুত নেতা, মন্ত্রী সহ তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।

তাই অন্য রাজ্যে মামলা যাতে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ না পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তাই এখন বিক্ষোভ বা অশান্তি যাতে কোনোভাবেই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা না করেন, তার জন্য দলের পক্ষ থেকে সকলকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। তবে তা সত্ত্বেও একশ্রেণীর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের পোস্ট করে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন।

কিন্তু দলের আর একটা অংশ, যারা প্রতিবাদ করছেন এবং বিজেপি, সিবিআই ও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আক্রমণ পথে নামার চেষ্টা করছেন, তাদেরকে সচেতন করতে ব্যস্ত রয়েছেন। অর্থাৎ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা যখন প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে, তখন রাজ্যপালের রিপোর্ট যাতে কোনোভাবেই শাসকদলের অস্বস্তির কারণ না হয়, এখন সেদিকেই নজর দিতে শুরু করেছে দলের এক শ্রেণীর নেতৃত্বরা।

তাই সচেতনভাবে ভবিষ্যতে পা বাড়ানোর চেষ্টা করছে ঘাসফুল শিবিরের একাংশ বলে দাবি করছেন পর্যবেক্ষকরা। যার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদকারী নেতা-কর্মীদের সচেতন থাকার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে মামলা, ধরনা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে কার্যত দ্বিধা-বিভক্ত তৃণমূল শিবির বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!