দলীয় সুপ্রিমোর নির্দেশ মতই মাঠে নামল তৃণমূল, সাফল্য মিলবে কি! প্রশ্ন দলীয় স্তরেই কলকাতা রাজ্য November 23, 2019 জাতীয় নাগরিকপঞ্জি একটা বাক্য। কিন্তু এই বাক্যটিকে নিয়েই প্রবল বিতর্ক রয়েছে। অসম এনআরসি লাগুর পর সেখানকার প্রচুর হিন্দু মানুষ সেই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বাদ যাওয়া সেই মানুষগুলো এখন ডিটেনশন ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছে বলেও দাবি একাংশের। আর অসমে এই এনআরসি তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই বাংলাতেও তা হবে বলে দাবি করতে শুরু করেছেন বঙ্গের বিজেপি নেতারা। তবে প্রথম থেকেই এনআরসির বিরুদ্ধে সরব হয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। প্রায় প্রতিটি প্রশাসনিক বৈঠক থেকে শুরু করে জনসভা, তিনি থাকতে কখনই এনআরসি করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাংলাতে কিছু কিছু বিজেপি নেতার পক্ষ থেকে এই এনআরসি করার ব্যাপারে কথা শোনা গেলে তার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব যে সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহার পড়ছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই। আর তাইতো এবার লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে সাফল্য পাওয়া বিজেপিকে চাপে রাখতে সেখানে এনআরসির বিরুদ্ধে জোর প্রচার করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছোতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। বস্তুত, কিছুদিন আগেই কোচবিহারে এসে দলের নেতাদের এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচার করার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার নেত্রীর নির্দেশ মতই কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে জেলা তৃণমূল। জানা গেছে, এদিন কোচবিহারের দিনহাটায় এনআরসির বিরুদ্ধে সভা করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণমঞ্চ। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার নিশিগঞ্জে জমিয়তে-উলামায়ে-হিন্দ এই এনআরসির বিরুদ্ধে তাদের জনসভা করে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। এছাড়াও আরও নানা ছোট-বড় সংগঠন এই এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচার করে কোচবিহার জেলা জুড়ে পথে নামতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল চেষ্টা করছে, যেনতেন প্রকারেণ বিজেপিকে দমিয়ে নিজেদের দিকে জনমত আনতে। ইতিমধ্যেই গোটা জেলা জুড়ে এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচার করে তৃণমূল নেতারা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে বলে দাবি করছেন একাংশ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতা বলেন, “অসমের মানুষের বিপদের কথা উত্তরবঙ্গের মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা পুরোপুরি বিজেপির বিপক্ষে গিয়েছে। তা আমাদের পক্ষে ভালো হয়েছে।” এদিকে এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “এনআরসি নিয়ে দলীয় ভাবে আমরা প্রচারে নেমেছি। নাগরিকত্ব বিলের কথা বলা হচ্ছে। তা মানুষের সামনে একটি বড় বিপদ। অসমে কি হচ্ছে, তা আমরা সবাই দেখছি। তাই সবাই মিলে এনআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে।” তবে তৃণমূলের একাংশ বলছেন, যেভাবে লোকসভায় বিজেপির উত্থান ঘটেছে, তাতে এই এনআরসি ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে নামলেও সাফল্য পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই যাচ্ছে। কেননা এখনও পর্যন্ত জেলা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। ফলে সেদিক থেকে দল তৃণমূল কংগ্রেস নামলেও নেতাদের একতা যদি চোখে না পড়ে, তাহলে মানুষ যে বিজেপি বিরোধীতার এই অস্ত্র ভালোমত গ্রহন করবে না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই। তবে তৃণমূল প্রচার করলেও তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “কিছু মিথ্যা এবং বিভ্রান্তমূলক প্রচার করে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে তৃণমূল।” সব মিলিয়ে নেত্রীর নির্দেশ মতো এনআরসির বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রচার করলেও তাতে ঠিক কতটা সাফল্য আসে, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -