বামেদের শাসন তৃণমূলের থেকে ভালো ছিল! অনুব্রতকে মুখের উপর জানালেন তৃণমূল নেতা! তীব্র চাঞ্চল্য কলকাতা মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য September 2, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বাম বিরোধিতার মধ্যে দিয়েই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে। 2011 সালের আগে প্রবল লড়াই আন্দোলন করে 34 বছরের বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। একের পর এক নির্বাচনে সাফল্যের সঙ্গে বৈতরণী পার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে গত লোকসভা নির্বাচন সময় থেকেই তাল কাটতে শুরু করে। বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির প্রভাব বাড়তে থাকায় আবার নতুন করে মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। সামনেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই নতুন আঙ্গিকে বুথে বুথে সভার মধ্যে দিয়ে এখন সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে যে অনুব্রতবাবুর দাপুটে বাঘে-গরুতে কার্যত এক ঘাটে জল খায়, সেই তার মুখের সামনে “তৃণমূলের থেকে বামেদের আমল অনেকটাই ভালো ছিল” বলে রীতিমত শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন এক তৃণমূল নেতা। সূত্রের খবর, এদিন সিউড়ির উত্তর পুরন্দরপুরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বুথ ভিত্তিক সভার আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। আর সেখানেই আগামী দিনে কোন বুথে কিরকম ফলাফল হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। যে আলোচনার সময় হঠাৎ করেই বুথ সভাপতির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। জেলা সভিপতিকে ওই তৃণমূল নেতা বলেন “গত লোকসভা নির্বাচনে আমার এলাকায় 2 ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি। মানুষের দাবি পূরণ না করলে এবারও আমরা হারব। কাজ হয়নি। মানুষের চাহিদা মেটাতে হবে। বেহাল রাস্তা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বুধবার বেরোনোর সময় স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রাস্তায় কি মাছ চাষ করবেন!” অর্থাৎ রাস্তা নিয়ে সেই তৃণমূল নেতার যে প্রধান ক্ষোভ রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে বুথ সভাপতির কাছ থেকে একথা শুনেই অনুব্রত মণ্ডল তাকে বলেন, “তাহলে কি বাম শাসন ভালো ছিল?” তখন তৃনমূলের বুথ সভাপতি বলেন, “সেই সময় অন্তত সাইকেল চালানো যেত। এখন তাও যায় না। রাস্তা জলে ভর্তি থাকে।” আর এতেই রীতিমত অবাক হয়ে যান বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যে বাম বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস, তৃণমূল নেতার গলায় যদি সেই বামেদের প্রশস্তি শোনা যায়, তাহলে দলের অস্বস্তি যে আরও বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিন বুথ সভাপতির মুখে একথা শুনেই তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। পরবর্তীতে সেখান থেকে নিজের 100 জনের বেশি অনুগামীকে নিয়ে বেরিয়ে যান তৃণমূলের বুথ সভাপতি। পরবর্তীতে তাকে তার জায়গায় রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে তৃণমূল নেতার মুখ থেকেই রাস্তাঘাটের কাজ নিয়ে এই রকম মন্তব্য আসায় এবং বাম আমলে ভালো ছিল বলে জানানোয় তৃণমূল যে ব্যাপক অশ্বস্তিতে পড়ল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমতায় আসার দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁর সরকার যে কাজ করে দিয়েছে, আগামী 100 বছরেও সেই কাজ কেউ করতে পারবে না। কিন্তু যেভাবে তার দলের নেতাই খোদ তৃণমূলের দাপুটে সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখের ওপরে রাস্তাঘাটের অবস্থা নিয়ে সরব হলেন, তাতে আগামী দিনে বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তৃণমূলকে এই কারণে যে অনেকটাই বেগ পেতে হতে পারে, সেই ব্যাপারে আশঙ্কা করছেন দলের একাংশ। দলের অন্দরে যদি এভাবে সরকারের কাজ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হতে থাকে, তাহলে মানুষের ক্ষোভকে সামাল দেবে তৃণমূল কংগ্রেস, নাকি দলের কর্মীদের সন্তুষ্ট করবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরমহলে। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -