উত্তরবঙ্গের পর জঙ্গলমহল, আলাদা রাজ্যের দাবিতে সরব হেভিওয়েট বিজেপি সাংসদ! উত্তরবঙ্গ পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া বিজেপি রাজনীতি রাজ্য June 21, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্ক এখনও সমান পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু সেই বিতর্ক থামার আগেই এবার জঙ্গলমহলের জেলাগুলোকে নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি তুলে সরব হলেন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। আর তার এই দাবিকে ঘিরে নতুন করে শোরগোল তৈরি হয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। প্রথম শুরুটা করেছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা। উত্তরবঙ্গের মানুষের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে সেখানকার জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা উচিত বলে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। আর এরপর থেকেই গুঞ্জন ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনার বিরোধিতা করা হয়। এমনকি বিজেপির পক্ষ থেকেও দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী সকলেই জানিয়ে দেন, তারা বাংলা ভাগের বিপক্ষে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ছাইচাপা আগুন আবার দপ করে জ্বলে উঠতে দেখা গেল। এবার জঙ্গলমহলের জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তুললেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ। স্বভাবতই একের পর এক সাংসদ যেভাবে কখনও জঙ্গলমহল, আবার কখনও উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলছেন, তাতে চাপ বাড়ছে নানা মহলে। সূত্রের খবর, এদিন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলার মন্তব্যকে সমর্থন করেন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। আর তারপরেই পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোকে নিয়ে যাতে আলাদা রাজ্য গঠন করা যায়, তার জন্য দাবি তুলতে দেখা যায় তাকে। বিজেপির এই হেভিওয়েট সাংসদ বলেন, “উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করা হোক, এই দাবি তুলেছেন জন বারলা। এই দাবিকে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। মমতা ব্যানার্জি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গকে ভেঙে বাংলাদেশে তৈরি করছেন। তাই আমিও চাইছি, রাঢ়বঙ্গ ভেঙ্গে আলাদা রাজ্য তৈরি করে দেওয়া হোক। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, জঙ্গলমহল এবং নিয়ে আলাদা রাজ্য হলে তো ক্ষতি নেই। মমতা ব্যানার্জি উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুই করেননি। এদিকে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির 50 কিলোমিটারের মধ্যে থাকা 23 জনকে মন্ত্রী করেছেন। আর উত্তরবঙ্গ থেকে মন্ত্রী কটা, উত্তর দিন মমতা ব্যানার্জি। উত্তরবঙ্গের মানুষজন আজ মমতা ব্যানার্জিকে বহিরাগত বলতেই পারে। বঞ্চনা করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গবাসীর প্রতি।” স্বাভাবিক ভাবেই পৃথক রাজ্যের দাবিতে জন বারলা দাবি তোলার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে খন্ডন করার পাশাপাশি বিজেপিও এই ঘটনাকে সমর্থন করেনি। তাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা কোনোমতেই বাংলা ভাগ চান না। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি যেভাবে গোটা ঘটনাকে সমর্থন করে জঙ্গলমহলের জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি তুললেন, তাতে ব্যাপক চাপে পড়ে গেল গেরুয়া শিবির বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসও বিজেপি বিরোধিতায় নতুন অস্ত্র পেয়ে গেল বলেই দাবি করছেন একাংশ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ইতিমধ্যেই বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “বিজেপি নেতারা বাংলার ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃতি কিচ্ছু জানে না। তাই এখন বাংলা ভাগ করার চক্রান্ত করছে। বাংলার প্রতি বিজেপি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বাংলাকে বিজেপি যে কোনো সম্মান করে না, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আস্তে আস্তে বিজেপি বাংলায় শেষ হয়ে যাবে। বিজেপি বলে কিছু থাকবে না।” যদিও বা একের পর এক সাংসদ বাংলা ভাগের পক্ষে সওয়াল করলেও, তাকে যে গেরুয়া শিবির সমর্থন করে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ ভাগের পক্ষে নয়। এই ধরনের মন্তব্য দল সমর্থন করে না। এই মন্তব্য যে করেছে, এটা তার নিজস্ব মতামত। এই ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।” তবে জন বারলা উত্তরবঙ্গ নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবির পর যেভাবে পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, তাতে গুঞ্জন ক্রমশ বাড়ছে। একের পর এক বিভিন্ন এলাকা নিয়ে যদি জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের মত করে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলতে শুরু করেন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তখন এটাই বড় প্রশ্ন সকলের কাছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -