তৃণমূলকে শক্ত করতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে দলের দায়িত্ব দিয়ে ভুল করলেন না তো মমতা-অভিষেক? শুরু ফিসফাস তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য November 15, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির উত্থান কিছুটা খারাপ ফলাফল হওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতার দায়িত্ব দেন প্রখ্যাত রননীতিকার প্রশান্ত কিশোরের ওপর। আর তারপরেই দলের একাংশ প্রকাশ্যে বিরোধিতা না করলেও, আড়ালে-আবডালে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত দিনে বাম আমলে লড়াই করে পরিবর্তন এনেছিলেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুধুমাত্র বিজেপিকে আটকানোর জন্য এখন অন্য কারও বুদ্ধি ধার করতে হবে! অনেকের কাছেই তৃণমূলের এই পদক্ষেপ খুব একটা সহজলভ্য মনে হচ্ছিল না। এদিকে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পর একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে দলকে সাধারণ মানুষের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেও, এখন সেই প্রশান্ত কিশোরের নানা পদক্ষেপ নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হতে শুরু করেছে দলের অন্দরে। বলা বাহুল্য, ইতিমধ্যেই নাম না করেই প্রশান্ত কিশোরের টিমের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে কোচবিহার দক্ষিণের মিহির গোস্বামী থেকে শুরু করে ব্যারাকপুরের শীলভদ্র দত্তকে। ঠিকাদারি সংস্থাকে দিয়ে কোনোদিন সাফল্য পাওয়া যায় না বলে দাবি করেছেন এই দুই বিধায়ক। স্বাভাবিকভাবেই দলের এই দুই সৈনিকের মন্তব্যতে অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু কেন প্রশান্ত কিশোরের ওপর ক্ষুব্ধ দলের একাংশ! একাংশের মতে, প্রশান্ত কিশোর দায়িত্ব নেওয়ার পরেই তার টিমকে দিয়ে বিভিন্ন জেলায় সমীক্ষা চালান। যেখানে সেই সমীক্ষায় যে সমস্ত নেতার কথা উঠে আসে, তাদেরকে সেই সমস্ত জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। যার ফলে বাদ পড়ে অধিকাংশ নেতৃত্ব। আর এরপর থেকেই প্রশান্ত কিশোরের টিমের ভূমিকা নিয়ে দলের অনেকে প্রকাশ্যে প্রশ্ন করতে শুরু করেন। যারা এতকাল ধরে দলকে সাফল্য পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জেলায় লড়াই দিল, কেন তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হল! তার নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ পঞ্জিভূত হতে শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই দলের অন্দরে এই প্রশান্ত কিশোরের টিমকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রশ্ন। তাই এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে তৃণমূলের অন্দরমহল নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তাহলে কি তৃণমূলকে শক্ত করতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে দায়িত্ব দিয়ে সব থেকে বড় ভুল করে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! স্বভাবতই বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই এই প্রশ্ন আরও বেশি করে চেপে বসতে শুরু করেছে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মাথার উপর। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, বর্তমানে তৃণমূলের যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা সেই প্রশান্ত কিশোরের মতামত অনুসারেই নেওয়া হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই কিছুদিন আগে তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল হলেও, সেখানে বড় কোনো জায়গা পাননি শুভেন্দু অধিকারীর মত দলের শীর্ষ স্তরের নেতারা। আর এরপর থেকেই শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে দলের দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি ক্রমশ বেগতিক দেখে কিছুদিন আগেই শুভেন্দুবাবুর বাড়িতে গিয়ে তার মান ভাঙানোর চেষ্টা করেছেন প্রশান্ত কিশোর বলে খবর। যদিও বা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তার দেখা হয়নি বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন জেলার একের পর এক বিধায়ক যত নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসছে, ততই যেভাবে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রশ্ন করছেন, তার পেছনে এই প্রশান্ত কিশোরের নানা সিদ্ধান্ত কাজ করছে বলে দাবি করছেন একাংশ। আর তাই প্রশান্ত কিশোরের সিদ্ধান্তে যখন দলের অনেকেই খুশি নয় বলে জানাচ্ছেন, তখন ধীরে ধীরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের ভাঙ্গন আটকাতে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি গোটা দল পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি তৃণমূলে ভাঙ্গন ধরবে। অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে যোগ দেবে ভারতীয় জনতা পার্টিতে। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে যেভাবে বিধায়করা বিদ্রোহ পোষণ করছেন, তাতে এই রকম ঘটনা ঘটলে তা অপ্রত্যাশিত হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থায় প্রশান্ত কিশোরকে যদি আরও বেশি করে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই নিজেদের হিতের কথা চিন্তা করে এবং দলের কর্মী থেকে শুরু করে নেতাদের ক্ষোভকে আটকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব এই ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -