এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল >  কেন্দ্রের টাকায় ফুটানি মমতার, ফের দিদির মিথ্যা সামনে আনলেন শুভেন্দু!

 কেন্দ্রের টাকায় ফুটানি মমতার, ফের দিদির মিথ্যা সামনে আনলেন শুভেন্দু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দুটো বদ অভ্যাস রয়েছে। প্রথমত, কেউ তার পাশে থাকলেও তিনি তাকে এবং তার অবদানকে স্বীকার করেন না। আর দুই, সব জায়গায় নিজে প্রচার পাওয়ার জন্য মিথ্যে কথা বলতে দু মিনিট ভাবেন না। না, এই সমস্ত অভিযোগ আমাদের নয়। এই অভিযোগ রাজ্যের বিরোধী দলের। আর সেই অভিযোগ এখন কিন্তু রাজ্যের মানুষও বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। কারণ এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি সভাতেই একটা কথা বলেন যে, কেন্দ্র নাকি টাকা দিচ্ছে না! কেন্দ্র নাকি রাজ্যকে বঞ্চিত করছে! কিন্তু প্রত্যেক ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ যে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক এবং মিথ্যায় ভরা, তা তথ্য পরিসংখ্যান সহকারে তুলে ধরেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কিন্তু একবার ভাবুন তো? এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গতকাল অর্থাৎ বুধবার হাওড়ার একটি সরকারি সভায় গিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। সেখানেও গিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, কেন্দ্র নাকি তার সরকারকে বঞ্চিত করছে! কিন্তু নিজের হাতে যে সমস্ত প্রকল্পের তিনি উদ্বোধন করলেন, জল জীবন মিশন থেকে শুরু করে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনে গাল ভরা হাসি দিয়ে টেলিভিশন মিডিয়ার সামনে এলেন, তার ছবি বড় বড় করে ছাপলো অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা, এই সমস্ত কিছু হলো কার জন্য জানেন? এই সমস্ত কিছু হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য। কারণ যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তিনি দিনরাত অভিযোগ করেন যে, তারা বাংলাকে বঞ্চিত করছে, সেই কেন্দ্র টাকা দিয়েছে বলেই তিনি হাওড়ায় এত বড় বড় কথা বলতে পারলেন এবং এত প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারলেন। কিন্তু বিন্দুমাত্র মানবতা নেই এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। যদি থাকত, তাহলে একবার হলেও তিনি স্বীকার করতেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পে অর্থ প্রদান করেছে। রাজনীতিকে ভুলে গিয়ে তিনি একবার হলেও কেন্দ্রীয় সরকারকে এর জন্য ধন্যবাদ দিতেন। কিন্তু না, সেটা করলেন না এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাই একেবারে সাত সকালে সেই বিষয়টি তুলে ধরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখোশ খুলে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যার ফলে ২৪ ঘন্টা বেরোতে না পেরেতেই মুখ্যমন্ত্রীর হাওড়ার সরকারি সভায় বলা বড় বড় কথা কার্যতো মিথ্যা হিসেবে উঠে এসেছে রাজনৈতিক সমালোচকদের কাছেও।

প্রসঙ্গত, আজ এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে তিনি গতকাল মুখ্যমন্ত্রী একটি সভায় যে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলেছেন এবং যেভাবে একের পর এক প্রকল্প উদ্বোধন করে নিজে প্রচার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন, সেই বিষয়টি নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দেন। তার পোষ্টের মধ্যে দিয়ে এই কথাই উঠে এসেছে যে, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সব সময় নিজে ক্রেডিট নিতে চান। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ প্রদানের মধ্যে দিয়েই এই সমস্ত প্রকল্প হয়েছে। অথচ তিনি সাতগাছিয়ায় এই সভাতে কেন্দ্রীয় সরকার নাকি বঞ্চনা করছে, এত বড় বড় কথা বলেছেন। কিন্তু একবারের জন্যেও কেন্দ্রকে ধন্যবাদটুকু দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তৃণমূলের নেতারা আবার শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলবেন যে, শুভেন্দুবাবু মিথ্যে কথা বলছেন। খুব ভালো কথা। তো শুভেন্দুবাবু যখন মিথ্যে কথা বলছেন, তাহলে তার এই পোস্টকে নিয়ে তৃণমূল আইনি পথে যাক। তৃণমূল শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করুক। তারা বুঝিয়ে দিক যে, কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোনো অর্থ দেয়নি, যা দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেটা করার মত ক্ষমতা এই তোলামূলের নেতাদের রয়েছে তো? আর ছেড়ে দিন, আপনাদের আইনি পথে যেতে হবে না। তাহলে আপনারা একটা কাজ করুন। অন্তত এই যে কাজ হয়েছে, সেই কাজে আপনারা কত টাকা দিয়েছেন, আর যদি কেন্দ্র টাকা দিয়ে থাকে, তাহলে সেই টাকার পরিমাণ কতটা! সেই নিয়ে একটা তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে আনুন। তাহলেই তো প্রমাণ হয়ে যাবে যে, শুভেন্দু অধিকারী ঠিক বলছেন, নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! অনেকে বলছেন, ১০০ দিনের কাজের টাকায় এবং আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্র নাকি আটকে রেখেছে! যারা সেই টাকা পাওয়ার জন্য নিজেদের চুরি ধরা পড়ে যাবে জন্য কেন্দ্রকে হিসাব দিতে পারে না, তারা এখানে মানুষের কাছে তথ্য আনবেন, এটা ভাবাটাও বৃথা। আসলে তৃণমূল নিজেরাও খুব ভালো মতো জানে যে, কেন্দ্র সাহায্য না করলে এই রাজ্য চলবে না। তবে শুধুমাত্র ভোট পাওয়ার জন্য সব জায়গায় নিজে ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। তবে শুভেন্দু অধিকারী যে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গালভরা গল্প দেবেন, মানুষকে ভুল বোঝাবেন, আর চুপচাপ সহ্য করে নেবে রাজ্যের বিরোধী দল, তেমনটা কিন্তু নয় বিজেপি। তাই বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর সভার কয়েক ঘন্টা পরেই একেবারে পোস্ট করে বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন্দ্রের সাহায্য না পেলে, কেন্দ্র অর্থ না দিলে মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারতেন না।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয় কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা বলতে কিছু নেই। সব জায়গায় প্রচার পাওয়ার জন্য তিনি যা খুশি তাই বলতে পারেন। তাই প্রতি পদে পদে কেন্দ্রের অবদানকে অস্বীকার করে বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। তবে এসব করে তিনি ভোট পাওয়ার চেষ্টা করলেও, তাতে বরফ গলবে না। বাংলার গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ এই সরকারের চালাকি ধরে ফেলেছে। তারা লোকসভাতে এই মিথ্যাবাদী মুখ্যমন্ত্রীকে চরম জবাব দেবেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, পাশের বাড়ির শত্রু হলেও যদি সে কোনোদিন কোনো বিপদে রক্ষা করে, তাহলেও তার অবদান ভোলা যায় না। অন্তত হাজার শত্রু হওয়া সত্বেও তার অবদানকে প্রকাশ্যে স্বীকার করে নেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ত সেটাও করেন না। তা না হলে তার রাজ্য যখন চলছে না, তিনি যখন আর্থিকভাবে অত্যন্ত সংকটে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, তখন কেন্দ্রের এই অবদান তিনি কি করে ভুলে যাচ্ছেন! কেন তার প্রকাশ্যে বলার মত ক্ষমতা নেই যে, কেন্দ্রীয় সরকার এক্ষেত্রে সাহায্য করেছে! আসলে প্রকাশ্যে এটা স্বীকার করে নিলে তো তার ভোটে আঘাত করবে। বাংলার মানুষ তো বুঝে যাবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যদি ভাবেন যে, বাংলার মানুষ তার সব কথা হজম করে নিচ্ছেন, আর তিনি যা বলছেন, সেটাই ঠিক, তাহলে তিনি বড় ভুল করছেন। কারণ, বাংলার মানুষের কাছে সত্য তথ্য তুলে ধরার জন্য রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বোকা বানিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যা কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে চালাকি করছেন, তার থেকেও বড় চালাক এই বাংলার গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ। আগামী দিনে এই চালাকির ফসল হাতেনাতে পেয়ে যাবেন এই রাজ্যের ফ্যাসিস্ট মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!